বেরোবির, ছাত্র নামের অছাত্র দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয়ে হলুদ সাংবাদিকতা

বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকতা মানে ছাত্রদের কাছে, এটা শুধু সাংবাদিক হিসেবে পরিচিতি পাবার ব্যাপার নয়,এটা গুরু দায়িত্ব ও বটে। তেমন কিছু তেলবাজ ও অতি চাটুকার শ্রেণীর তথাকথিত সাংবাদিকদের কারনে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকতা আজকাল হকারি কান্ডে পরিণত হয়েছে!

আর কিছু স্বার্থান্বেষী অসৎ ও সাংবাদিক পেশাজীবী মানুষ আছে যারা নিজেদের অসততাকে আড়াল করে, বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে বিশেষ একটি মহলকে অন্যায় ভাবে সুবিধা দেবার জন্য, দু’চার পয়সার বিনিময়ে অসংবাদকে সংবাদ তৈরী করিয়ে দেয় ।মাঝে মাঝে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শ কাতর ক্যাম্পাস বিষয়ক খবর গুলো বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকদের সংবাদ না করা, তার বড় একটি প্রমাণ।

হকার যেমন পণ্যাদি ডেকে ডেকে ঢাকার নিউমার্কেটে পন্যদ্রব্য বিক্রি করে, তেমনি আজকাল কিছু চাটুকার শ্রেণীর লোলুপ লোক ছাত্র নামের কলঙ্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিক হিসেবে প্রবেশ করে সাংবাদিকতাকে হকারি পণ্যের চাইতেও সস্তা বানিয়ে ছাড়ছে! বেরোবির মিথ্যা, অসম্পূর্ণ, বানোয়াট ও অসংবাদকে সংবাদ করা সহ বিশেষ একটি মহলের পালের গোদাদের বহিষ্কার কে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ না করা, হকারী মনোভাবেরই বহিঃপ্রকাশ।

যার ফলে রাষ্টে্রর চতুর্থ স্তম্ভ সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম কর্মীরা ( বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক) নিজেরাও অতিমাত্রায় সস্তা হয়ে যাচ্ছে! গুরুত্বহীন হয়ে যাচ্ছে!

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন,ছাত্র রাজনীতি কিংবা অন্য যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোন স্তরের লোকদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদকর্মীদের ব্যাক্তি সখ্যতা কিংবা নিবিড় সম্পর্ক থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কেননা দিন শেষে বিশ্ববিদ্যালয় সা্ংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মীরাও বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ছাত্র।

তবে,তাদের হাতে অর্পিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বা রাষ্ট্র এর চতুর্থ স্তম্ভের মর্যাদা রক্ষার দায়িত্বও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দ্বারা গঠিত সাংবাদিক ও গণ মাধ্যম কর্মীদের।

রাষ্ট্রের ভৌগোলিক অবস্থা রাষ্ট্রের একটি স্তম্ভ। একে যেভাবে অতন্দ্র প্রহরীর মতোই পাহারা দেয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা।,তারা খুব নিকটে অবস্থান করেও প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের সাথে রাষ্ট্রের প্রয়োজন ছাড়া অসখ্যতাও গড়েতুলে না।

যেমনটি একজন বিচারকের বেলায়ও দেখা যায়। রাষ্ট্রের আরেক স্তম্ভ বিচার বিভাগের প্রতিনিধিত্ব করা বিচারকগণ যখন তার খাসকামরা কিংবা এজলাসে বসেন তখন তিনি আর ব্যক্তি থাকেন না। সেখানে তিনিই রাষ্ট্রের স্তম্ভ।

তেমনি আপনিও যখন বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক/সংবাদকর্মী তখন আপনি ব্যক্তি নন বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ স্তম্ভ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি স্পর্শ কাতর ও গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ প্রকাশ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক দের নৈতিক দায়িত্ব।

সুতরাং সাংবাদিকতাকে পুঁজি করে সখ্যতা গড়ে তুলতে খানিকটা ভাবা উচিৎ- “আপনি কিংবা আপনার গণমাধ্যমটি কারো দাসে পরিণত হচ্ছেনা তো?”

কথাটি কেন বললাম, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন জন কর্মকর্তার( দুদকের মামলায়)বহিষ্কারের সংবাদকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় কীট, সাংবাদিক নামের কলঙ্ক সংবাদ না করাতে, নবপ্রজন্ম শিক্ষক পরিষদ কর্তৃক এই প্রসঙ্গে একটি বিবৃতি প্রদান করেছে। ফেসবুক চালু করতেই এমন কিছু সংবাদের নোটিফিকেশন এলো, যেগুলোতে চোখ রেখে একজন বেরোবির অফিস স্টাফ হিসেবে লজ্জিত বোধ করলাম!

হে বেরোবির সাংবাদিক, এবিষয়ে আপনার ন্যুনতম দায়িত্বজ্ঞান কিংবা দায়িত্ববোধ থাকা জরুরী। আপনি এই আদর্শিক ধারার বাইরে গিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে জড়িত সবার অস্তিত্বে আঘাত করতে পারেন না! এটা অনিয়ম।

অনিয়মটাই যদি নিয় নিয়ম হতো তাহলে বিচারকগণ তার অফিসে আসা মেহমান, আত্মীয় বা বন্ধুবান্ধবকে পাশের চেয়ারে বসিয়ে রেখেই বিচারকার্য সম্পাদন করতেন। অন্যদিকে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরাও অহরহ সীমান্তরেখা অতিক্রম করে পাশের দেশের সীমান্তরক্ষী সদস্যদের বাসায় দাওয়াত খেতে যেতো!

আসলে আপনাদের কথা কি বলবো। যারা কোনটা স্বীকৃত গণমাধ্যম অার কোনটা অস্বীকৃত তার বিচার না করে আপনার হাতে ক্যামেরা ও কলম দেখলেই দেদারসে আপনাকে সাংবাদিক বলে যাবে! এটা পূর্বের বেরোবি নয়,এটা প্রফেসর ডক্টর মেজর নাজমুল অাহসান কলিমউল্লাহ, বিএনসিসিও স্যারের দায়িত্বে থাকা বেরোবি।

আর যারা চতুর্থ স্তম্ভের সনদ আপনার হাতে তুলে দেবার আগে ন্যুনতম জানারও চেষ্টা করেননি- আপনি কে, কি আপনার যোগ্যতা? যারা টাকার বিনিময়ে আপনার হাতে এই দায়িত্ব তুলে দিলেন! যারা বিকাশ কিংবা রসমালাইয়ের পেকেট পেয়ে প্রতিদিন নানাবিধ খবর ছেপে যাচ্ছেন, প্রকাশ করে যাচ্ছেন,যাচ্ছে তা’ই!গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ কে বৃদ্ধ অাঙ্গুল দেখিয়ে, মূলধারার সাংবাদিকদের প্রশ্নবিদ্ধ করছেন! আগে সেইসব কুলাঙ্গারদের এই পেশা/ব্রত থেকে ঝাঁটাপেটা করে বেরোবি থেকে বিদায় করা জরুরী।

মোঃ খোরশেদ আলম
পি এ টু পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়,রংপুর।

Comments

comments

%d bloggers like this: