আঙুল ভাঙার প্রতিশোধ নিতে স্বামী পরিত্যক্তা খুরশিদাকে কাঠ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা!

চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের দক্ষিণ বেতিয়ারা গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা ৫৫ বছর বয়সী হোসনেয়ারা বেগম প্রকাশ খুরশিদা নামের এক বৃদ্ধাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আটক আবুল হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। গত সোমবার কুমিল্লার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট গোলাম মাহবুবের আদালতে ১৬৪ দ্বারা জবানবন্দিতে এ স্বীকারোক্তি প্রদান করেন। আবুল হোসেন খুরশিদার আপন ছোট বোনের জামাই। ছয় মাস আগে আঙুল ভাঙার প্রতিশোধ নিতে গত ৪ মার্চ খুরশিদাকে পিটিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় আবুল হোসেন। এ ঘটনায় ওইদিন খুরশিদার পাশ^বর্তী বাড়ির বাস চালক জাফর আহম্মেদ বাদি হয়ে গ্রেফতারকৃত আবুল হোসেনকে আসামী করে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ১৩ মার্চ পুলিশ সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পলাশপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সেকেন্ড অফিসার এসআই মনির হোসেন জানান, গত ৪ মার্চ দক্ষিণ বেতিয়ারা গ্রাম থেকে স্বামী পরিত্যক্তা হোসনেয়ারা বেগম প্রকাশ খুরশিদার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওইদিন খুরশিদার পাশ^বর্তী বাড়ির বাস চালক জাফর আহম্মেদ বাদি হয়ে গ্রেফতারকৃত আবুল হোসেনকে আসামী করে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ঘটনার পর থেকে আবুল হোসেন পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রযুক্তি ব্যবহার করে আবুল হোসেনকে ১৩ মার্চ রাতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পলাশপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার শেষে আবুল হোসেন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়-সে একাই খুরশিদাকে হত্যা করেছে। কেন হত্যা করা হয়েছে-এ প্রশ্নের জবাবে আবুল হোসেন জানান, নিহত খুরশিদা অনেকটা মানসিক প্রতিবন্ধী ছিল। হত্যার ৬ মাস আগে খুরশিদা তুচ্ছু কারণকে কেন্দ্র করে আবুল হোসেনকে অশালীন ভাষায় গালাগাল করে। এক পর্যায়ে তার বাম হাতের ‘অনামিকা’ আঙুল ভেঙে ফেলে। বিষয়টি তিনি মনের মধ্যে ক্ষোভ হিসেবে জমা করে রাখেন। পরবর্তীতে হত্যার আগের দিন ৩ মার্চ সন্ধ্যায় খুরশিদা আরও একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবুল হোসেনের বাসায় গিয়ে অশালীন ভাষায় গালমন্দ করে চলে যান। ছয় মাসের আঙুল ভাঙার প্রতিশোধ এবং হত্যার আগের দিন গালাগালের বিষয়টি কোনমতে মেনে নিতে না পারায় ৪ মার্চ ভোর রাত আনুমানিক ৩ ঘটিকার সময় আবুল হোসেন কৌশলে খুরশিদার ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় খুরশিদার ঘরের ভিতরে রাখা ২৪ ইঞ্চি শক্ত কাঠ দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় খুরশিদার মুখমন্ডলে স্বজোরে বাড়ি মারলে নাক ফেটে রক্ত বের হতে লাগলে আবুল হোসেন ঘর থেকে বের হয়ে মসজিদে গিয়ে ফজর নামাজ পড়ে পালিয়ে ঢাকায় চলে যায়। পরবর্তীতে দিনের সময় তিনি জানতে পারেন-খুরশিদার রক্তাক্ত লাশ থানা পুলিশ উদ্ধার করে। এ সংবাদ পেয়ে আবুল হোসেন তার এক বন্ধুর সহযোগিতায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পলাশপুর গিয়ে আত্মগোপন করে থাকে। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ১৩ মার্চ পলাশপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ১৫ মার্চ কুমিল্লার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট গোলাম মাহবুবের আদালতে ১৬৪ দ্বারা জবানবন্দিতে এ স্বীকারোক্তি প্রদান করেন।

Comments

comments

%d bloggers like this: