নগরীতে যানজট নরিসনে ৪০জন কলজে ছাত্র
তৈয়বুর রহমান সোহেল ।।
মুখে বাঁশি আর হাতে লাঠি
কুমিলøা নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে ৪০জন কলেজ ছাত্র যানজট নিরসনে কাজ করছে।
সূত্র জানায়,কয়েকদিন পূর্বেও কুমিলøার যে সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থান যানজটে নাকাল ছিলো, সোমবার থেকে ওই সব স্থানে সামান্য পরিমাণ যানজট পরিলÿিত হয়নি! অগোছালো রিকশা-সিএনজি অটোরিকশায় বিবর্ণ চত্বরগুলোকে বেশ সুশ্রী,পরিপাটি দেখাচ্ছে। কুমিলøার বিভিন্ন কলেজের রোভার স্কাউট সদস্যদের ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকার কারণে বদলে গেছে দৃশ্যপট।
মঙ্গলবার সরেজমিনে কুমিলøা নগরীর কান্দিরপাড় পূবালী চত্বর, লিবার্টি মোড়, টমছমব্রিজ এবং কারাগার সড়কে রোভার সদস্যদের ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। শ্রাবণ-রোদ্দুরে মুখে বাঁশি আর হাতে লাঠি নিয়ে রা¯Íায় চমৎকার ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে ছাত্রদের। রা¯Íায় যানজট নিরসনের পাশাপাশি যেখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পার্কিং করা গাড়িগুলোকে সারিবদ্ধ করতে বাধ্য করছে ছাত্ররা। জেলা রোভার ও কুমিলøা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ রোভার স্কাউটের নেতৃত্বে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে যানজট নিয়ন্ত্রণ করছে তারা। শহরের যেসব কলেজে রোভার স্কাউট চালু আছে ওইসব কলেজের শিÿার্থীরা ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা পালন করছে। কুমিলøা জেলা রোভার স্কাউট সূত্রে জানা যায়, ট্রাফিক সপ্তাহ উপলÿে প্রতিদিন দুই শিফটে বিভক্ত হয়ে ৪০জন রোভার স্কাউট সদস্য নিয়মিত ট্রাফিক পুলিশকে সহায়তা করবেন। কুমিলøার গণমুখী বিভিন্ন পয়েন্টে তারা এ সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। রোভারের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুরো মাস ধরে এ কার্যক্রম চলতে পারে বলে কুমিলøার রোভার স্কাউট সূত্রে জানা গেছে। সকাল ১০টা থেকে ২টা এবং ২টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত ছাত্রদের এ কার্যক্রম চলবে। সংগঠনের ছাত্রদের স্বেচ্ছাশ্রম আর জেলা রোভার কর্তৃক সামান্য আর্থিক সহযোগিতায় এ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ছাত্ররা।
রা¯Íায় ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা পালন করা রূপসী বাংলা কলেজের দুই ছাত্র জুয়েল ও আরিফ জানায়, সারাদেশে নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্ররা আন্দোলন করছে। কুমিলøার গুরুত্বপূর্ণ স্থান সমূহকে যানজট মুক্ত রাখতে জেলা রোভারের নির্দেশনায় স্ব-প্রণোদিত হয়ে কাজ করছি।
ইবনে তাইমিয়া কলেজের দুই ছাত্র আইনুল হাসান অনিক ও কাউসার হোসেন জিহাদ জানায়, সড়ককে যানজট মুক্ত ও নিরাপদ রাখতে কাজ করছি। কুমিলøার জন্য সামান্য ভূমিকা রাখতে পেরে আনন্দ অনুভব করছি।
কুমিলøা জেলার সিনিয়র রোভারমেন্ট প্রতিনিধি মো. জাবেদ হোসাইন বলেন, এ কাজে আমরা জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের টেকনিক্যালি সহায়তা পাচ্ছি, অর্থের যোগান সংগঠন থেকে দিতে হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশ সপ্তাহে এ কার্যক্রম চলবে। আগস্ট মাস পুরোটাতেই আমরা যানজট নিরসনে কাজ করার ব্যাপারে আশাবাদী।
ট্রফিকের ভূমিকায় থাকা রোভার স্কাউটের শিÿার্থীরা মূলত কমিউনিটি পুলিশের অংশ হয়ে যানজট নিরসনে কাজ করছেন । বিষয়টি অবশ্যই ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে সড়কে চলাচলরত বাহন চালক ও সাধারণ পথচারীদের মধ্যে। এ বিষয়ে কুমিলøা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি কুমিলøা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যÿ প্রফেসর আমীর আলী চৌধুরী জানান, ঢাকায় শিÿার্থীদের ট্রাফিকিংয়ের ভূমিকায় দেখা গেলেও কুমিলøায় অনেক পরে রোভার স্কাউটের শিÿার্থীরা ট্রাফিকিংয়ের কাজটি শুরু করেছে। এমন চিন্তাভাবনা আগেই দরকার ছিলো। তবুও ভালো লাগছে, যানজট নিরসনে শিÿার্থীদের এমন ভূমিকা ভবিষ্যতের জন্য বেশ কার্যকর হবে ।
এ বিষয়ে কুমিলøা পুলিশ সুপার মো.শাহ আবিদ হোসেন বলেন, কুমিলøা মহানগরীর মত গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশের মাত্র ৪৬ সদস্য দায়িত্বপালন করে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। যানজট নিরসনে আরো জনবল প্রয়োজন। সড়কে চলাচল করা যানবাহনের চালক ও সাধারণ পথচারীদের মাঝে ট্রাফিক আইন-ট্রাফিক সিগনাল মানার প্রবণতা মেনে চলার মানসিকতার অনেক অভাব রয়েছে। তবে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের অংশ হিসেবে নগরীর বিভিন্ন শিÿাপ্রতিষ্ঠানের রোভার স্কাউটের সদস্যরা ট্রাফিক পুলিশের সাথে সমন্বয় করে যানজট নিরসনে কাজ করছে। বিষয়টি বাহন চালক ও সাধারণ পথচারীদের মাঝে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এভাবে অদূর ভবিষ্যতে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি যানজটমুক্ত সড়ক রাখতে পারবো বলে আমি বিশ্বাস করি।