ধর্ষণ করতে এলেই ধর্ষক ঝলসে যাবে

ধর্ষণ করতে এলেই তার দিকে ছুঁড়ে দিতে হবে জুতো সহ পা। ব্যাস, মুহূর্তে ইলেকট্রিক শকে জ্ঞান হারাবে দুষ্কৃতী। নির্ভয়ার স্মৃতি বুকে নিয়ে এমনই এক অভিনব জুতো আবিষ্কার করল ১৭ বছরের সিদ্ধার্থ মান্ডালা। সবে স্কুলের গণ্ডি পেরিয়েছে সিদ্ধার্থ। ফিজিক্সের এক সাধারণ থিয়োরির উপর ভিত্তি করেই এই জুতো বানিয়ে ফেলেছে সে। সেই জুতো পায়ে যত বেশি হাঁটবেন তত চার্জ বাড়বে ব্যাটারিতে।

০.১ অ্যাম্পায়ারের ইলেকট্রিকে ঝলসে যাবে অপরাধী। শুধু চার্জ থাকলেই হবে। শুধু তাই নয়, সঙ্গে সঙ্গে অ্যালার্ট চলে যাবে পুলিশ এবং আত্মীয়দের কাছে। ফিজিক্স ক্লাসে শিখেছিলেন ‘পিজোইলেকট্রিক এফেক্ট’। সেই থিয়োরি থেকেই এই আবিষ্কার। সিদ্ধার্থ এই জুতোর নাম দিয়েছে ‘ইলেকট্রো শু’

তবে এটা একদিনে হয়নি। টানা দু’বছর ধরে চলেছে লড়াই। সোশ্যাল মিডিয়ায়, লিংকড ইনে বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই বিষয়ে আরও বেশি জানতে শুরু করে সিদ্ধার্থ। সঙ্গে ছিল বন্ধু অভিষেক। বারবার ভুল হয়েছে। তবুও হাল ছাড়েনি সে। মোট ১৭ বার পরীক্ষা ব্যর্থ হয়েছিল। শুধু মাথায় ছিল ১০০০ বার ব্যর্থ হওয়ার পর বাল্ব আবিষ্কার করেছিলেন থমাস এডিসন। তাই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল দুই বন্ধু। অনেকে তাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। নিজে দু’বার ইলেকট্রিক শক লেগেছে তার। অভিষেকের তো নাক ফিয়ে রক্ত বেরতে শুরু করেছিল একবার। তবুই হাল ছাড়েনি তারা।

তবে কেন হঠাৎ এই উদ্যোগ? নির্ভয়া-কান্ডের পরই সূত্রপাত। তখন সিদ্ধার্থের বয়স মাত্র ১২। তার মা’কে সে দেখেছিল দিনের পর দিন বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিতে। নির্ভয়ার জন্য পথে নেমেছিল বহু মানুষ। যখন সে পুরো বিষয়টা জানতে পারল, তখন তাকে নাড়া দিয়েছিল ঘটনাটা। সপ্তাহে সপ্তাহে মায়ের সঙ্গে মিছিলে পা মেলাতে শুরু করে সিদ্ধার্থ। তিন মাস ধরে চলে প্রতিবাদ। কোনও লাভ হয়নি। বিচার ব্যবস্থার উপর তখন আস্থা উঠতে শুরু করেছে। তখন সিদ্ধার্থের মনে হয়েছিল এরকম একটা ঘটনা যদি তার মায়ের সঙ্গে ঘটত কিংবা তার কোনও বান্ধবীর সঙ্গে? এরপর থেকেই ভাবনা-চিন্তা শুরু। মেয়েদের রক্ষা করতে কিছু একটা করতেই হবে। এই ভাবনা থেকে এমন আবিষ্কার।

সম্প্রতি তার এই জুতোর কথা প্রচার করছেন তেলেঙ্গানার মন্ত্রীরাও। এইভাবে তার আবিষ্কার মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে দেখে সত্যিই সে গর্বিত। একটি এনজিও চালায় সিদ্ধার্থ। সেখানকার সদস্যরা কখনও স্কুলের ছেলেমেয়েদের সাহায্য করে তো কখনও রাস্তার গর্ত বুজিয়ে দেয়। আর সেইসঙ্গে চলে ধর্ষণের বিরুদ্ধে সতর্কতামূলক প্রচার। এভাবেই দেশের এক প্রান্তে কার্যত নিঃশব্দে জির তৈরি করছে ১৭ বছরের সিদ্ধার্থ।

Comments

comments

%d bloggers like this: