কুমিল্লায় সরকারী চাউল বিক্রিতে ব্যাপক অনিয়ম, অভিযোগ তদন্তে ৩ সদস্য কমিটি গঠন.


চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সরকারের ১০ টাকা কেজি চাউল বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এক ডিলারের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগি গ্রাহকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণাঞ্চলের ডিলার আলী আক্কাস মজুমদার গরীব অসহায়দের জন্য সরকার বরাদ্দকৃত ১০ টাকা কেজি চাল বিক্রিতে ব্যাপক অনিয়ম করেছে। জানা যায়, মুন্সীরহাট ইউনিয়ন দক্ষিনাংশের কার্ডধারী সাধারণ গ্রাহকরা দীর্ঘদিন ধরে সরকার নির্ধারিত ১০ টাকা কেজি দামের চাল পাচ্ছে না। কেউ কেউ পেলেও সরকার নির্ধারিত পরিমাণে পায়নি বলেই গ্রাহকদের অভিযোগ। ভুক্তভোগিরা জানায়, সরকার নির্ধারিত তারিখে চাল বিতরণ না করে ডিলার নিজের খেয়াল খুশিমত চাল বিতরণ করে। গ্রাহকদেরকে জানানোর প্রয়োজনও মনে করেনা। ৩০ কেজি চালের স্থলে ২৫ কেজি চাল দেয়া হয়েছে অনেক সময়। গ্রাহকদের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করা হলে পরবর্তীতে ৩০ কেজি চাল দেয়া হয়েছে ঠিকই, তবে, তারজন্য সাধারণ গ্রাহকদের দিতে হয়েছে অতিরিক্ত ৫০ টাকা। এছাড়াও কার্ড বিতরণেও রয়েছে নানা অনিয়ম। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, নিকটাত্মীয়সহ নিজের পছন্দমত লোকের মাঝেই চালের এই কার্ড বিতরণ করেছে সে। এমনকি অনেক কার্ডধারী গ্রাহক নিজেও জানেন না, তার নামে কার্ড রয়েছে। এর ফলে সে তাদের কার্ডগুলো নিজের সংরক্ষণে রেখে চাল বিতরণ না করেও কার্ডে চাল বিরতণের কথা উল্লেখ করে এবং গ্রাহকদের সই-স্বাক্ষর নকল করে রিপোর্ট জমা দিয়ে দেয় সংশ্লিষ্ট অধিদফতরে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ছাতিয়ানী গ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. আবুল খায়ের মজুমদার, মো. খলিলুর রহমান মজুমদারসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, শুধু আমাদের ছাতিয়ানী গ্রামেই গত পাঁচ মাস ধরে ৪২ জন গ্রাহক কোন প্রকার চাল পায়নি। এমন ঘটনা পাশবর্তী ছোটখিল, বৈলপুর, দেড়কোটাসহ আরো কয়েকটি গ্রামেও ঘটেছে বলে জানা যায়।
সরেজমিনে গিয়ে এমন বহু অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এই সমস্যাটির সমাধান করতে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সু-দৃষ্টি আকর্ষণ করছে ১০ টাকা কেজি চালের কার্ডধারী সাধারণ ও দরিদ্র গ্রাহকরা।
মুন্সীরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মাহফুজ আলম জানান, বিষয়টি সত্য কিনা তা যাচাই করা হচ্ছে। সত্যতার প্রমান পেলে অভিযুক্ত ডিলারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা খাদ্য অধিদপ্তর কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন বলেন, মুন্সীরহাট ইউনিয়ন দক্ষিণাঞ্চলের ডিলার আলী আক্কাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, এরই মধ্যে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত ডিলার আলী আক্কাস বলেন, প্রকৃতপক্ষে, আমি কোন অনিয়মই করিনি। বরং গ্রাহকদের মাঝে সঠিক নিয়মেই চাল বিতরণ করেছি। অনেকে আমার কাছে কার্ড জমা রাখে এবং ২০/ ৫০টাকা গ্রাহকেরা সম্মান করে বখসিস দিয়ে যায়।

Comments

comments

%d bloggers like this: