কুবি বাসে বহিরাগতদের হামলা,
অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শিক্ষার্থীদের
মাসুদ আলম।।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাসে বহিরাগতদের হামলার অভিযোগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভাড়া করা বিআরটিসি বাসে এই হামলা হয়। বাস চালককে রক্ষা করতে গিয়ে এসময় আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দশম ব্যাচের শিক্ষার্থী দ্বীন মোহাম্মদ। এর প্রতিবাদে রাত সাড়ে আটটায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সদর দক্ষিণ বেলতলী এলাকায় শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুমিল্লা কোটবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাহিদ আহম্মেদ।
তিনি বলেন, কুবি শিক্ষার্থীদের বাসে দুপুরে হামলা করেছে কিছু বহিরাগত যুবক, এমন অভিযোগ তুলে রাত সাড়ে আটটায় শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলেছি। দোষীদের খুব তাড়াতাড়ি আইনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। এখন মহাসড়কের অবস্থা স্বাভিক রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুর দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শহর অভিমুখে ছেড়ে যাওয়া ৫ নম্বর বাস কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ফটক পেরোনোর পর এক মোটরসাইকেল আরোহী বাস ওভারটেক করতে চান। কিন্তু সরু রাস্তায় ওভারটেকিং করার সুযোগ না পেয়ে মোটরসাইকেল যোগে ৮-১০ জন বহিরাগত সন্ত্রাসী বাসের গতিরোধ করে। এ সময় মারমুখী সন্ত্রাসীরা বাস ড্রাইভার আলাউদ্দিনের উপর চড়াও হয় এবং ধারালো দেশীয় অস্ত্রহাতে তাকে মারতে আসে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্বীন মোহাম্মদসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা সন্ত্রাসীদের বাধা দেন। ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীরা বাসে হামলা করলে দ্বীন মোহাম্মদ আহত হয়। এসময় বাস ড্রাইভার আলাউদ্দিন দ্রুত পালিয়ে যান। পরে দ্বীনের উপর সন্ত্রাসীরা চড়াও হলে তিনিও অটোরিকশাযোগে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
বাসে থাকা শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই ছাত্রী ছিলেন। কয়েকজন হামলার ভিডিও করতে গেলে তাদের মুঠোফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয় এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করা হয়। এ সময় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোর করে ভিডিও ডিলিট করতে বাধ্য করে সন্ত্রাসীরা।
আহত শিক্ষার্থী দ্বীন জানান, তার শরীরের বেশ কয়েক জায়গায় ধারালো অস্ত্রের গুরুতর আঘাত লেগেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ড. স্বপন চন্দ্র মজুমদারের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি একাধিকবার ফোন কেটে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন ঘটনা প্রসঙ্গে জানান, ঘটনার কথা শুনে আমি প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের পাঠিয়েছি। পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। তারা ঘটনাস্থলে মোবাইল টিম পাঠিয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৩ মে কুমিল্লার পুলিশ লাইন এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাসে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হন কমপক্ষে ১৫ জন শিক্ষার্থী।