১২ বছরের শিশুর পেটে আরেক শিশু!

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের ১২ বছরের এক শিশুর পেটে(লেপারোটমি) আরেক শিশুর অস্তিত্বের সন্ধান পেয়েছেন চিকিৎসকরা।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের ১২ বছরের এক শিশুর পেটে(লেপারোটমি) আরেক শিশুর অস্তিত্বের সন্ধান পেয়েছেন চিকিৎসকরা। ছবি: সংগৃহীত
টিউমার ভেবে অপসারণ করার পর জন্মগত জমজ শিশুটির ভেতর থেকে আরেকটি শিশুর হাত ও যকৃৎও পাওয়া যায়
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের ১২ বছরের এক শিশুর পেটে (লেপারোটমি) আরেক শিশুর অস্তিত্বের সন্ধান পেয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে, না কোনো ধর্ষণের কারণে এ অস্তিত্ব দেখা যায়নি। বরং চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুটি জন্মগতভাবে জমজ।
শিশুটির চিকিৎসক ঠাকুরগাঁও জেলা সদরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকের ডা. মো. নুরুজ্জামান জুয়েল বলেন, “রহিমানপুর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়ার গ্রামের বাবুল রায়ের শিশুকন্যা বিথিকা রায় জন্মগতভাবেই জমজ। মেডিকেল টার্মে যাকে বলা হয়- Fetus in Feto (অর্থাৎ বাচ্চার পেটের ভেতরে বাচ্চা)।”
তিনি বলেন, “বিথিকা জমজ, কিন্তু কোনো কারণে আরেক শিশু পৃথিবীর মুখ দেখতে পায়নি। এটা বিথিকার জন্মের সময় থেকে তার পেটে থেকে যায়।”
পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কিছুদিন থেকে ১২ বছরের বিথিকার শারীরিক পরিবর্তন ঘটতে থাকে। বিশেষ করে তার তলপেট বড় হতে দেখা যায়। ধারণা করা হয়, বিথিকা হয়তো কোনো লম্পটের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়েছে।
‘লোকলজ্জার ভয়ে’ স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে বিথিকার পরিবার রংপুরের একজন চিকিৎসকের কাছে যান। সেখানে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক জানায়, বিথিকার পেটে বড় আকারের টিউমার রয়েছে। যা জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করা দরকার।
দিনমজুর বাবুল রায় রংপুরে অপারেশন করার সামর্থ্য না থাকায় মেয়েকে নিয়ে ঠাকুরগাঁও হাসান এক্স-রে ক্লিনিকে ভর্তি করে। সেখানের চিকিৎসক ডা. মো. নুরুজ্জামান জুয়েলের তত্ত্বাবধানে ওই শিশুর চিকিৎসা চলে।
ক্লিনিকের চিকিৎসক মো. নুরুজ্জামান জুয়েল জানান, গত শুক্রবার বিকালে বিথিকার পেট অপারেশন (লেপারোটমি)করে চার কেজি ওজনের টিউমার সদৃশ একটি বস্তু দেখতে পাওয়া যায়। পরে সেটি অপসারণ (লেপারোটমি) করতে গিয়ে দেখা যায় এর ভেতরে আরেক শিশু। সেখানে শিশুর শরীরের হাত, কলিজাসহ নানা অংশ বিদ্যমান।
এই চিকিৎসক বলেন মেডিকেলের ভাষায় একে বলা হয়- Fetus in Feto (অর্থাৎ বাচ্চার পেটের ভেতরে বাচ্চা)।
তিনি বলেন, “বর্তমানে তার (শিশু বিথিকা) শারীরিক অবস্থা ভালো। আশা করা যায় আর কোনো ঝুঁকি নেই।”

Comments

comments

%d bloggers like this: